Wednesday, September 12, 2012

পটিয়ায় সাহিত্য বিশারদ পাঠাগার সরকারি পৃষ্ঠপোষাকতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে অতিহ্য
বাংলা সাহিত্যের অমর গবেষক মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের ৫৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর  স্মৃতি রক্ষাতে চট্টগ্রাম জেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের নামে, তাঁর নিজের হাতে গড়া গণ পাঠাগারটি বর্তমানে সরকারি এবং বেসরকারী রক্ষনা বেক্ষন না থাকায় এর অতিহ্য হারাতে বসেছে।
সাহিত্য বিশারদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ২০০১ সালে আ’লীগ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান  মন্ত্রী এম এ মান্নান সাহিত্য বিশারদের নামে পাঠাগারটির নামকরণ করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।্এক সময় পাঠাগারটিতে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী  বই পড়ার জন্য ভিড় জমাত। দীর্ঘ দিন ধরে  এ পাঠাগারটিতে সরকারি ব্সেরকারি খাতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার ফলে পাঠাগার ভবন ও  পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকার কারেনে বই পড়ার সে শিক্ষার্থীদের আমেজ  পূর্বের মত নেই বললে চলে।
বর্তমান পাঠাগারে প্রায় ৬ হাজারের অধিক বই সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বই আদিকালের এবং শত বছরের পুরানো। এ ছাড়াও  অনেক নাম করা রবিন্দ্র-নজরুরে সম্পাদিত  পুরানো পত্রিকার কপি  পাঠাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। এ পাঠাগার থেকে নিয়মিত প্রকাশ করা হয় একটি  দেয়ালিকা পত্রিকাও। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সাহিত্য বিশারদের মৃত্যু বার্ষিকী, এ উপলক্ষে পটিয়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যে সৃনশীল সাহিত্য গোষ্ঠী মালঞ্চ, সাহিত্য বিশারদ স্মৃতি সংসদ, পটিয়া প্রেস ক্লাব ও সাংবাধিক সমিতিসহ উল্লেখযোগ্য।
এ ব্যাপারে সাহিত্য বিশারদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও ভূর্ষি ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ছৈয়দ জানয়েছেন, বাংলার সাহিত্য জগতের উজ্জ্বল নকত্র উপমহাদেশের ক্যাতিয়মান পুরুষ মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্য বিষারদের স্মৃতি বিজরিত পটিয়ায় সাহিত্য বিষারদ স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে আগামী ৩০সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, পুষ্প মাল্য অর্পন ও চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানান।
২০০৪ সালে বিএনপি-জমায়াত জোট সরকার জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র থেকে ১৪৯টি বই পাঠাগারের জন্য অনুদান দেয়। ২০০৯ সালে মহাজ্টো সরকার ক্ষমতায় এলে অধিকাংশ বই রাজনৈতিক বিষয়ে লেখা হওয়ায় পাঠাগার থেকে নিয়ে যায়। ২০১০ সালে  কিছু মুত্তিযোদ্ধা ভিত্তিক বই জাতীয় গ্রন্থাগার থেকে দেওয়া হয়।
১৮৪৫ সালে পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়। ১৮৫৯ সালের দিকে স্কুলটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিনত হয়। ১৮৬৭ সালে পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা  প্রথম এন্টার্স পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ ১৮৯৩ সালে পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্টার্স পাশ করেন বর্তমান এস এস সি পরীক্ষর সমমান।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি স্কুলের সভাপতির  দায়িত্বে থাকা কালিন সময়ে শুরু হয় পটিয়া স্কুলে  পাঠাগার গড়ার কাজ।
১৮৩১ সালে আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ পটিয়া পৌর সভার সুচক্রদন্ডী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্য বরণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্য হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন পুথিঁ সংগ্রহ করে বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে পরিপুর্ণ করেছেন তিনি আড়াই হাজারের বেশী পুর্থি সাহিত্য সংগ্রহ করে বাংলা একাডেমী , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,কদম মেবারক এতিমা খানায় সংক্ষন রয়েছে তা লেখা ও  সম্পাদিত একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। পটিয়া আর্দশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি দাশ বলেন, সাহিত্য বিশারদ আমাদের স্কুলের ছাত্র হিসেবে আমরা খুব গর্ব বোধ করি সাহিত্য বিশারদের জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকী সরকারীভাবে পালন করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান।
এ ব্যাপারে পটিয়ার প্রাচীণতম সাহিত্য সংগঠন সৃজনশীল সাহিত্য গোষ্ঠী মালাঞ্চের সাধারণ সম্পাদক সাংবাধিক শিবুকান্তি দাশ বলেন, তিনি প্রাচীণ পুঁথি সাহিত্যকের একত্রিত করে বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে বিকাশিত করেছেন। তার সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য বাঙ্গালী জাতি সাহিত্য বিশারদকে চিরদিন স্বরণ করবেন।
সাহিত্য বিশারদ স্মৃতি পাঠাগারের গ্রন্থগার ও শিক্ষক রাশেদুল হক মিজান ও শিক্ষক আবদু ছত্তার এবং সুনীল কুমার বডুয়া বলেন,আমাদের পাঠাগারটি আধুনিকায়ন না হওয়ায় আগরে মত পাঠক আসছে না। ছাত্রদের তুলনায় পাঠাগারের আয়তন অনেক ছোট বর্তমান সস্কুলের ছাত্র সংখ্যা ১২/১৫ শ জন শিক্ষার্থী আমাদের স্কুলে রূেয়ছে।
পটিয়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্রপৌর নাগরিক ছাত্র পরিষদের সমন্বয়ক  এজেটএম আহমদ উল্লাহ, সাংবাদিক  মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী বলেন পটিয়া স্কুলের পাঠাগারটি চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে সব চেয়ে বড় পাঠাগার হিসেবে এক সময় খুব সুনাম ছিল প্রতি বছর বিভিন্ন সাহিত্য-সাঙস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত এখন কিন্তু হচ্ছে না,  আমাদের স্কুল কতৃপক্ষ সাহিত্য বিশারদের মত একজন খ্যাতনামা ব্যক্তির মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কোন কর্মসুচীর আয়োজন না করায় আমরা হতাশ।