History Of Patiya


ফিরে দেখা পটিয়া

 *মুক্তিযুদ্ধে পটিয়া*
[মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ছোট ছিলাম বলে যুদ্ধে যাওয়া হয়নিযুদ্ধে না গেলেও আজও কানে বাজে পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনীর মেশিনগান-কামানের গোলার শব্দ, কানে বাজে হানাদারদের জঙ্গীবিমানের গর্জন, চোখে ভাসে পাকিস্তানী বর্বরতার দৃশ্য, স্মৃতিতে ভাসে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথাশৈশবের সেই স্মৃতির মনিকোটা হতে হাতড়িয়ে বের করে আনা হয়েছে এই লেখাটি পরিসরের সংক্ষিপ্ততা ও ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে পটিয়ার মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত অনেক তথ্য ও অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম এই লেখায় উল্লেখ না থাকায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি] বাঙালি জাতির ইতিহাসে যে কটি বীরত্ব গাঁথা রয়েছে সে সবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বীরত্বগাঁথা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধপৃথিবীর খুব কম জাতি রয়েছে, যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে, স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেনমুক্তিযুদ্ধে যারা অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁদের সুবাদেই বাঙালি জাতি শত শত বছর পরাধীনতার শৃঙ্খলে থাকার পরও বীরের জাতিতে পরিণত হয়েছিল এই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে বীর প্রসবিনী পটিয়া বৃটিশ শাসনামল হতে শিক্ষা দীক্ষায় প্রাগ্রসর পটিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ছিল অগ্রভাগেবাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী বিভূষি ভূষণ চৌধুরী প্রকাশ মানিক চৌধুরী ছিলেন পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের সূর্যসন্তান (এই সূর্য সন্তানের জন্য আমরাও গর্বিত) ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও সুলতান কুসুমপুরী বিজয়ী হওয়ার পর হতেই মূলত ঐতিহাসিক পটিয়া আন্দোলন সংগ্রামে মুখরিত হয়ে উঠেআমার স্পষ্ট মনে আছে নির্বাচনে বিজয়ের পর আমাদের হুলাইন গ্রাম হতে বের করা একটি মিছিল বড়দের সাথে আমরা পিচ্ছিরাও সামিল হয়েছিলামযে মিছিলের শ্লোগান ছিল ‘‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’’, ‘‘সাত তারিখে জিতলো কে, নৌকা-নৌকা’’, ‘‘সতের তারিখ জিতলো কে, নৌকা-নৌকা’’, ‘‘ইয়াহিয়ার মুখে লাথি মারো পূর্ববাংলা স্বাধীন করো’’ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের সেই কালো রাতে যখন বর্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে ঢাকায় নিরস্ত্র প্রতিরোধের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা২৬ মার্চ চট্টগ্রাম (আগ্রাবাদ) বেতার কেন্দ্র হতে প্রথমে এম এ হান্নান ও পরে ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করলে পটিয়াবাসী তথা সারা দেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়সেদিন ঝাউতলা রেলস্টেশনসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিহারী কর্তৃক বাঙালি নিধনের সংবাদেও পটিয়াবাসী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেপটিয়ার জাতীয় পরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুরুল ইলাম চৌধুরী, পূর্ণেন্দু দস্তিদার, চৌধুরী হারুনুর রশিদ, আবুল মাসুদ চৌধুরী, নুরুন্নবী, অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ, শামসুদ্দিন আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন দাশ, অধ্যাপক শামসুল ইসলামসহ আরও অনেকের নেতৃত্বে পটিয়াবাসী মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে পটিয়ার সর্বস্তরের জনতা সেদিন পূর্ববাংলার স্বাধীনতার নেশায় উম্মাদ হয়ে উঠেহাজার হাজার ছাত্র-জনতা ভারতে গিয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়অনেকে দেশের অভ্যন্তর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেমুষ্ঠিমেয় কিছু স্বাধীনতা বিরোধী থাকলেও মূলত: পটিয়া ছিল স্বাধীনতাকামী মুক্তি পাগল জনতার দুর্ভেদ্য দূর্গসম্ভবত একমাত্র পটিয়াই ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত হানাদার মুক্ত তথা স্বাধীন ছিল
পটিয়াবাসীর রাজনৈতিক সচেতনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কথাটি বুঝতে পেরে যুদ্ধের প্রথমদিকেই পাকিস্তানী বিমানবাহিনী ১৪ এপ্রিল শুক্রবারে পটিয়া সদরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেসেদিন প্রায় অর্ধশতাধিক লোক শহীদ হনযুদ্ধের শুরুতে পাকিস্তানী বাহিনীর এই বর্বরতা পটিয়াবাসীকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রেরণা জোগায় মুক্তিযুদ্ধে শুরুতে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী মেজর জিয়াউর রহমান ও তকালীন পটিয়ার সন্তান ক্যাপ্টেন অলি আহমদ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র পতনের পর পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের হুলাইন গ্রামের আমিন শরীফ চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিশ্রাম নিয়েছিলেন বলে জানা যায়স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ক্যাপ্টেন অলি আহমদ বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেনপটিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের মধ্যে অনেকের নাম আজ মনে না থাকলেও কিছু মুক্তিযোদ্ধার ও সংগঠকের নাম আজও স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করছেতাদের মধ্যে এডভোকেট জালালউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, এস এম ইউসুপ, আহমদ শরীফ মনির, ধীরেন দাশ, মোহাম্মদ মহসিন, আহমদ নবী, মাহফুজুর রহমান খান, আবদুস ছালাম, শামসুদ্দিন আহমেদ, আবদুল বারিক, প্রফেসর শামসুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, ফজল আহমদ চৌধুরী, দীলিপ কান্তি দাশ, শাহ আলম, অনিল নালা, আবুল কাশেম, ফজলুল হক, আবদুস শুক্কুর, আবু তাহের বাঙালি, মুক্তিমান বড়ুয়া, মাওলানা এমদাদ, ফজল আহমদ, নূর মোহাম্মদ, শহীদ সুবেদার আবদুস ছালাম, মরহুম মোজাহেরুল হক, আ.জ.ম. সাদেক, কাজী আবু তৈয়ব, মহিউদ্দিন, একেএম আবদুল মতিন, প্রদ্যু পাল, চৌধুরী মাহবুব, ইউসুপ খান, শিরু বাঙালি, আবদুস ছবুর, মোহাম্মদ আসলাম, মো: রফিক খান, রফিক আহমদ, ফেরদৌস চৌধুরী, আবু তাহের, সোলেমান কমান্ডার, সোলায়মান খান, আবদুল হক, স্বপন চৌধুরী, আবুল হাশেম মাস্টার প্রমুখের নাম উল্লেখ্যযোগ্য চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ক্যাপ্টেন করিমের নাম অবিস্মরণীয় হয়ে আছেতিনি পটিয়ার অধিবাসী না হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার নাম ছিলেনদুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে শহীদ হয়েছিলেনবিনিনেহারার ডা. শামসুল আলম ও গৈড়লার আহমদ হোসেন মাস্টার মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় সহায়তা করতেন বলে জানা যায়এ দুজনের বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি হিসেবে সুপরিচিত ছিল পটিয়ার মুক্তিযুদ্ধে মিলিটারী পুলের পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধের কথা মনে হলে আজও গা শিউরে উঠেসেপ্টেম্বর সংঘটিত এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছিলেনপাকিসত্মানীদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের আক্রমনের মুখে পেরে না উঠে মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ পর্যমত্ম পিছু হটেছিলেন, সে যুদ্ধে হুলাইনের সোলেমান কমান্ডার, সোলায়মান খানসহ ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন যুদ্ধের পর পাকিস্তানী বাহিনী ক্রোধান্বিত হয়ে পুরো সেনেরহাট জ্বালিয়ে দেয় এবং হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের শত শত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়সেদিন হানাদার বাহিনীর সাথে দেশীয় অনেক রাজাকারও অংশ নিয়েছিল বলে জানা যায়সেদিন চরকানাই ফুলতলে হুলাইনের শামসুল আলম পাকিস্তান বাহিনীর হাতে শহীদ হন পটিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মোজাফফরাবাদ হত্যাকান্ড বেদনার স্মৃতি হিসেবে আজীবন সকলের মনে থাকবেপাকিস্তানী আর্মি মোজাফফরাবাদে সেদিন শতাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং অর্ধশতাধিক হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোককে হত্যা করেছিলপটিয়ার মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্মৃতি হয়ে আছে ধলঘাট, গৈড়লার টেক ও জিরি মাদ্রাসার যুদ্ধযে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের সন্ত্রস্থ করতে পেরেছিলেনপটিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা খাসমহল আক্রমন করে জ্বালিয়ে দিয়েছিলআক্রমন করেছিলেন লাখেরার ওয়্যারলেস সেন্টারমনসার টেকে রাজাকার কর্তৃক স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষকে হত্যার ঘটনা যুদ্ধের বেদনাবহ স্মৃতির অন্যতম মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ের একদিন সকালে হুলাইন গ্রামের মানুষ হতচকিয়ে গিয়েছিলকেননা এর আগের দিন রাত্রে গ্রামের প্রায় কয়েকশ কিশোর-তরুণ একযোগে যুদ্ধে অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়েছিলএতগুলো ছেলের একযোগে গ্রাম ত্যাগে পুরো গ্রাম জুড়ে কান্নার রোল উঠেছিলযাকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে চিহ্নিত করা যায়সেদিন যারা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে ছিল তাদের মধ্যে নুরুল হাকিম, মরহুম কিবরিয়া, ইউসুপ খান, মরহুম হারুনুর রশিদ, সাইফুল্লাহ রফিক, আনোয়ারুল ইসলাম, হারুন খান, নুরু, সোলায়মান খান প্রমুখের নাম এখনও মনে আছেসেদিন তাদের সাথে আমার অগ্রজ মরহুম শফি খানও চলে গিয়েছিলেনদুর্ভাগ্যজনক সত্য হলো তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র যোগার করতে পারেনি হুলাইন গ্রামের তকালীন ছাত্রলীগের সদস্য মুজিবুর রহমান খান (বর্তমানে এডভোকেট) সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের ইনফরমার তথা সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বতোভাবে সহায়তা করতেন মরহুম আ.জ.ম. নুরুল আলম মাস্টার, মোজাফফর আহমদ, নেছার আহমদ চৌধুরী, জাফর আহমদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সেবাশুশ্রুষা করার আমার নিজেরও হয়েছিলবাবার সাথে পরিচয়ের সুবাদে পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী থানার খিতাপচর গ্রামের আলতাফ নামের একজন ইপিআর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা পার্বত্য অঞ্চলে সম্মুখ যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন পরবর্তীতে তাঁকে গোপনে চিকিসা দিয়ে কিছুটা সুস্থ হলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়কিন্তু নিজ বাড়িতে তিনি নিরাপদ না হওয়ায় বাবা তাঁকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসেনআমাদের নির্মাণাধীন মাটির দালানের দোতলায় তিনি থাকতেনসেখানেই তার খাওয়া দাওয়া হতোরাত্রে তিনি আমাদেরকে নিয়ে অল্পক্ষণের জন্য বের হতেনসে সময় তার কাছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনতাম (জানি না আজ কোথায়)তিনি প্রায় ২০ দিন থাকার পর সুস্থ হয়ে চলে গিয়েছিলেন ১৬ ডিসেম্বর যখন পাকিসত্মানী বাহিনী রেসকোর্স ময়দানে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর প্রধান জগজি সিং অরোরার নিকট আত্মসমর্পণ করে, তখন সারাদেশের মতো পটিয়াতেও আনন্দের বন্যা বয়ে যায়পটিয়ার সর্বত্র বিজয় দিবস উদযাপিত হয়বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে ১৭ ডিসেম্বর আমাদের এলাকায় হাবিলাসদ্বীপ হাই স্কুলের মাঠে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় দিবস উদযাপন করেনতিনটি এলএমজির সাহায্যে ফাঁকা গুলি ছুড়ে সেদিন উসবের সূচনা করা হয়েছিলমুক্তিযোদ্ধাদের জয় বাংলা, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, জেলের তালা ভাঙ্গবো শেখ মুজিবকে আনবো ইত্যাদি শ্লোগানে মুখরিত হয়েছিল সারা গ্রামসেদিন বোয়ালখালী হতে গ্রেফতারকৃত ১৭ জন পাকিসত্মানী সৈন্যকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল, যাদেরকে মুক্তিযোদ্ধারা গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছিলেন
 

*ব্যবসা বানিজ্যে পটিয়া*

পটিয়া চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নানা আন্দোলন সংগ্রামে এর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল অবস্থানতাই সে স্মরণাতীত কাল থেকেই ভারত উপমহাদেশে জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে পটিয়ার খ্যাতিশিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনীতি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠায় পাকিস্তান আমলেই এটি মহকুমা শহরের স্বীকৃতি পায়স্বাধীনতা উত্তরকালে পায় জেলার স্বীকৃতি
অতি প্রাচীনকালে এ এলাকায় ভৈরব নামক উত্তাল তরঙ্গ সংকুল নদ থাকা এবং চক্রশালাস্থ রাজঘাটা সেই নদের উপকূলস্থ ঘাট হওয়া প্রাচীন কোন কোন পুস্তকে পাওয়া যায়আবার রাজঘাটার কাছাকাছি সওদাগর ভিটিনামে প্রসিদ্ধ কতেক পতিত স্থান আছেযুগ যুগ ধরে লোকমুখে এটি সওদাগর ভিটি হিসেবেই পরিচিতকিন্তু কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না, কে সে সওদাগর? তার নিকটে একটি পুরাতন পুষ্করিণী আছেসেই পুষ্করিণী খনন করতে গিয়ে কালে তলিয়ে যাওয়া কোন এক জাহাজের মাস্তল ও অন্যান্য নমুনা পাওয়া গিয়েছিল বলে স্থানীয় প্রবীণ লোকেরা জানানসেকালে ঐ ভৈরব নদের জলে যে নানা বাণিজ্য জাহাজ ভাসত এবং রাজঘাটা যে জাহাজ নোঙর করার স্থান বা ঘাট ছিল, এ ব্যাপারে অনেকেরই নিশ্চিতকারো কারো মতে তকালে চাঁদ সওদাগর যে উপনদী দিয়ে বাণিজ্য উপলক্ষ্যে এ এলাকায় গমনাগমন করতেন সেটি পরবর্তীকালে চাঁদখালী নামকরণ হয়েছে
তাছাড়া সেকালে আরকানিয়া আরবীয় বণিকদের কোলা বলতফলে আরবীয় বণিকেরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য উপলক্ষে এসে পটিয়ার যে স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করলো সেটি কোলগাঁও নামে অভিহিত হয়চট্টগ্রাম ছিল অতি প্রাচীন বন্দরব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও চট্টগ্রামের গুরুত্ব অতি প্রাচীনআর সেকালে মজবুত কাঠের তৈরী সমুদ্রযান তথা জাহাজ-ই ছিল পরিবহন ব্যবসার অন্যতম মাধ্যমচট্টগ্রামের তৈরী জাহাজ ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপ, চীন দেশ, ব্রহ্মদেশ, মালদ্বীপ, লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান, জাভা-সুমাত্রাসহ সুদূর মিশর দেশেও নোঙর করতোসেকালে শতাধিক জাহাজের মালিক ছিল চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরাঅনেকে জাহাজ ব্যবসায়ও খ্যাতি লাভ করেছিলপরবর্তীকালে (ব্রিটিশ পিরিয়ড) এ জাহাজ ব্যবসার উত্তরাধিকার হয়ে সে ঐতিহ্য ধরে রেখেছিলেন চট্টগ্রামের এয়াকুব আলী দোভাষ, আবদুর রহমান দোভাষ, আবদুল হক দোভাষ ও দৌলতপুরের আবদুল বারী চৌধুরীআবদুল বারী চৌধুরী রেঙ্গুনে ব্যবসা বাণিজ্য করে বিশাল ধন সম্পদ গড়ে তুলেছিলেন এবং ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামে বেঙ্গল-বার্মা ষ্টীম নেভিগেশন কোম্পানীপ্রতিষ্ঠা করেনপরে আবদুল জলিল চৌধুরী এ ঐতিহ্য অনুসরণ করে জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বেগম ডক ইয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করেনসে ধারাবাহিকতায় এখন পটিয়ার কোলাগাঁও-এ প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েষ্টার্ন মেরিণ শিপ ইয়ার্ড, কর্ণফুলী শিপ ইয়ার্ড দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে বর্তমানে ২০১০সালের শেষের দিকে গড়ে ওঠা “শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র” দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১৫০মেগাওয়াট বিদ্যুদিয়ে দেশের বিদ্যু ভান্ডারকে আলোকিত করেছে। সেকালে কোন রকম ট্রেন বা যান যোগাযোগের ব্যবস্থাই ছিল নাবিস্তীর্ণ এলাকা ছিল সমুদ্র বা নদীগর্ভে নিমজ্জিত এবং পরে চরে পরিণত হয়ে বসতির পত্তন হয়েছেবেশ কিছু গ্রাম্য নাম তা-ই প্রমাণ করে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কালুরঘাট রেল সেতুটি নির্মাণ করেপরবর্তীতে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুন রেল সেতুটি খুলে দিয়ে চট্টগ্রাম-দোজাহারী পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার রেলপথের সূচনা করেনট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা হলে পটিয়ার গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়প্রসার ঘটতে থাকে ব্যবসা-বাণিজ্যেরগত শতকের মাঝামাঝি কাল অবধি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়কটি পিচঢালা হয়নিতাই শহর থেকে দোজাহারী পর্যন্ত লোকজন প্রধানত ট্রেনেই চলাচল করত তখন এ এলাকায় যোগাযোগের জন্য মটরগাড়ী কিংবা রিক্সা সাইকেল কিছুই ছিল নাপাল্কি, ঘোড়ার গাড়ী, গরুর গাড়ী ও নৌকা এসব বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হতোছিল না বিদ্যু ব্যবস্থাআজকের এ ভৌত অবকাঠামোর অনেক কিছুই ছিল নাছিল সম্পূর্ণ গ্রামীণ পরিবেশইন্দ্রপুল চাঁনখালী খালের তীরে অবস্থিত ছোট-খাট একটি বন্দরের মতো ছিল এ এলাকার লবণ শিল্প গড়ে ওঠার আগে জমজমাট গাছের ব্যবসা ছিলপটিয়ার শ্রেষ্ঠ সব কাঠ ব্যবসায়ীদের ঐ জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলতখন সমিল ছিল নাকথিত আছে ঐ এলাকার লবণ শিল্পের জন্য বেশ খ্যাতি অর্জন করেগত শতাব্দীর পঞ্চাশ দশকের গোড়ার দিকে মরহুম হাজী চুন্নু মিয়া সওদাগর এই ইন্দ্রপুলে প্রথম যাঁতাকল স্থাপন করে এখানে লবন শোধন প্রক্রিয়া শুরু করেনপরে দু-এক বছরের মধ্যে আরো বার/তেরটি যাঁতাকল স্থাপিত হয়ইন্দ্রপুল প্রথম লবন গুদাম তৈরী করেন আল্লাই গ্রামের মরহুম কাজী জামালউদ্দীন ও মরহুম নুরুল হকষাটের দশকে চট্টগ্রামের মাদারবাড়ী এলাকার জনৈক লালমিয়া সওদাগর ইন্দ্রপুলে এবং ঢাকার জনৈক সফদর আলী সওদাগর দোহাজারীতে আধুনিক লবণ শোধন মিল স্থাপন করে নব দিগন্তের সূচনা করেনএ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে আধুনিক লবণ শোধনাগার সমেত প্রায় ৩৮টি লবণ ছিলযা দেশের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ লবণের চাহিদা মেটায়এই ইন্দ্রপুল চাঁনখালী খালের তীরে অবস্থিত বলেই এটি একটি ছোট-খাট বন্দরে রূপ নেয়ব্রিটিশ পিরিয়ডের অনেক আগে থেকে এর পার্শ্ববর্তী কাগজী পাড়ায় ৎপাদিত হাতে তৈরী কাগজ দেশব্যাপী প্রসিদ্ধ ছিল পটিয়ার আল্লাই গ্রামই ছিল এ হাতে তৈরী কাগজ শিল্পের প্রধান কেন্দ্র এখানকার ৎপাদিত কাগজ সারা দেশে সাধারণত হরিতালী কাগজ নামে বেশ পরিচিত ছিল এ কাগজ ৎপাদিত করে গ্রামের প্রায় সব পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতোইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী চট্টগ্রামের দেওয়ানী শাসনের কর্তৃত্ব লাভের পর একই গ্রামের শেখ আমান আলী চৌধুরীকে কোম্পানীর চাহিদা মতো কাগজ সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করেছিলেন১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানী তাকে কাগজ সরবরাহের পুরষ্কার স্বরূপ কাগজী মহাল নামে একটি তরফ দিয়েছিলেনতালতলা চৌকি এলাকায় ওয়াইজ উদ্দিন সওদাগরের মুদির দোকান, মুন্সেফ বাজারে মহাজনের দোকান, পুরান থানা হাটে বংশী মহাজনের দোকান বেশ প্রসিদ্ধ ছিলস্টেশন রোডে নোয়াব আলী সওদাগরের একটি বেকারী শপ ছিলসেখানে বিস্কুট, কেক ও রুটি তৈরী হতো পরবর্তীতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে হাট-বাজার, বাসষ্ট্যান্ডসহ জনবহুল এলাকাগুলোতে চাহিদার ভিত্তিতে নানা পণ্যের দোকান গড়ে উঠতে থাকে
স্মরনাতীত কাল থেকে যোগাযোগ সুবিধার কারণে পটিয়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছিলদক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যান্য থানার সাথে পটিয়ার এবং পটিয়া থেকে চট্টগ্রাম তথা অন্যত্র যোগাযোগের জন্য ব্রিটিশ আমলের শেষ পর্যায়ে ট্রেন, নৌ, মোটরযান যোগাযোগ তিনটি মাধ্যমেই অত্যন্ত সুবিধাজনক হয়ে উঠেফলে এলাকাটি একটি অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে রূপলাভ করেছেপটিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে কাপড়, লবণ, আটা, ময়দা, ধানের কল, মিল, হোটেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা, পোল্ট্রি, ডেইরীসহ ছোট খাট পণ্যের দোকানএখানকার দোকানীরা চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে তাদের পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে
পটিয়াতে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা থাকলেও জামানতের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সহজ শর্তে ঋণ পায় নাযুগে যুগে শিল্পায়নই হচ্ছে বেকার সমস্যা সমাধান ও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার উল্লেখযোগ্য মাধ্যমপটিয়া বিসিক শিল্প নগরী বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছেএখানে কয়েকটি কারখানা, যেমন- টেক্সটাইল, বিস্কুট মিল, পাখা নির্মাণ কারখানা, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ প্যাকেট মসলার কারখানা ইত্যাদি রয়েছেএগুলো দেশীয় বাজারে বিক্রির জন্য তৈরী করা হয় এখানকার সুখ্যাত পণ্যের মধ্যে সাইলেক্স বিস্কুট কোম্পানীর বিস্কুট সারা দেশে সরবরাহ করা হয়ে থাকে সম্প্রতি পশ্চিম পটিয়া তথা শিকলবাহা ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের মইজ্জ্যার টেক এলাকায় গড়ে উঠেছে বিশাল আকৃতির শিল্পজোনহাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের মিলিটারী পুল সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অপর এক শিল্প জোন পাক আমল থেকে এ পর্যন্ত ষ্টেশন রোড, শহীদ সবুর রোড ছাড়াও থানার মোড়, মুন্সেফবাজার, আমজুর হাট, শাহগদী মার্কেট, মনসার টেক, বোর্ড বাজার, শান্তিরহাট, কলেজ বাজার, বাস ষ্ট্যান্ড, কমলমুন্সির হাট ইত্যাদি এলাকা পণ্য বিপণন কেন্দ্র হিসেবে জমজমাট হয়ে উঠেছেপটিয়া সদরে গড়ে উঠেছে বেশ কটি শপিং কমপ্লেক্স ব্রিটিশ পিরিয়ড থেকে এ পর্যন্ত পটিয়ার যেসব সমস্ত ব্যক্তি ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তারা হলেন, জয়রাম মহাজন, অশ্বিনী মহাজন (পটিয়া সদর), গোপাল মহাজন (পটিয়া সদর), কাসেম জুট মিলের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব এম এ কাশেম, নুর আহমদ সওদাগর (পটিয়া সদর), হাজী নুরুজ্জমান সওদাগর (খরনা), হাজী ফজল আহমদ ইন্জিনিয়ার (শোভনদন্ডী), হাজী ফজল আহমদ (কোলাগাঁও), মতি সওদাগর (পটিয়া সদর), সোনা মিয়া সওদাগর (পটিয়া), হাফেজ আহমদ সওদাগর (পটিয়া সদর), আমজু মিয়া সওদাগর (পটিয়া সদর), আবদুল জলিল সওদাগর (ডেঙ্গাপাড়া), হাজী আবদুস ছমদ সওদাগর (পটিয়া সদর), হাজী নুরুল হক (পটিয়া সদর), হাজী আবদুল হক (পটিয়া সদর), হাজী ছালেহ আহমদ সওদাগর (হুলাইন), সম্ভু চৌধুরী, মণীন্দ্র (হাইদগাঁও), স্বদেশ দাশ (ধলঘাট), সদানন্দ ঘোষ (গৈড়লা), আবদুল জলিল চৌধুরী (শিকলবাহা), এমদাদ খান সওদাগর (পটিয়া সদর), আজিজ সওদাগর (পটিয়া সদর), কামালউদ্দিন কোম্পানী (পটিয়া সদর), জামালউদ্দিন কোম্পানী (পটিয়া সদর), সূফী নুরুল্লাহ (পটিয়া সদর), হাজী নবী সওদাগর (ভাটিখাইন), হাজী সরু মিয়া সওদাগর (ছনহরা), কৃষ্ণ দাশ, ননী ধর, মণীন্দ্র লাল ভট্টাচার্য (গৈড়লা), সূর্য্য মহাজন (পটিয়া সদর), মদন হাজী (শিকলবাহা), আহম্মদ নূর সওদাগর (পটিয়া সদর), হাজী গোলাম রহমান সওদাগর (পটিয়া), আলী সওদাগর (হাইদগাঁও), আনু মিয়া চৌধুরী (শিকলবাহা), কবির আহমদ সওদাগর (পটিয়া সদর), নজির আহম্মদ সওদাগর (পটিয়া সদর), আলহাজ্ব আবু ছিদ্দিক চৌধুরী (চরকানাই), আহমদ মিয়া সওদাগর (ডেঙ্গাপাড়া), বাবু গৌরাঙ্গ মোহন সিকদার, আমিন শরীফ সওদাগর, আহমদুল হক সওদাগর (খরনা), আবদুল হক (আল্লাই), হাজী নুরুল হক সওদাগর (ভাটিখাইন), শাহনেওয়াজ চৌধুরী মন্টু (প্রয়াত এমপি, হুলাইন)এছাড়া বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যারা অবদান রেখে চলেছে- আলহাজ্ব খলিলুর রহমান (কেডিএস গ্রুপ), মোহাম্মদ আবু তৈয়ব (টিকে গ্রুপ), আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবুল কালাম (টিকে গ্রুপ), সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম গ্রুপ), আকতার হোসেন ফিরোজ (ইউনাইটেড গ্রুপ), আবুল বশর চৌধুরী (মাসুদ এন্ড ব্রাদার্স), সাইফুল আলম মাসুদ (মাসুদ ফিস প্রসেসিং), হারুনুর রশিদ (এইচ আর গ্রুপ), আলহাজ্ব মীর আহমদ সওদাগর (মীর গ্রুপ), লায়ন আজিম আলী (ডায়মন্ড সিমেন্ট), আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী (বর্তমান এমপি), গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল (সাবেক এমপি), সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (সাবেক এমপি), মোহাম্মদ নাছির (বিজিএমইএ পরিচালক), এয়াকুব আলী (এয়াকুব গ্রুপ), আলহাজ্ব নুরুন্নাহার চৌধুরী, হাজী আবদুল মালেক, এম এ মালেক, আলহাজ্ব ইউসুফ চৌধুরী, আলহাজ্ব আহমদ শফি, আলহাজ্ব মোহাম্মদ শফি, আলহাজ্ব আবদুল মোতালেব চৌধুরী, লোকমান হাকীম, এম এ জাফর, হাজী সামশুল আলম চৌধুরী, নুর মোহাম্মদ চৌধুরী, মোহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী, আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়া (পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান), আলহাজ্ব মোহাম্মদ সেলিম নবী, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন রশিদ, নুরুল কাইয়ুম খান, আলহাজ্ব সোলতান আহম্মদ, অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, সুধীর কুমার পালিত, আবু মুছা, শহীদুল ইসলাম, মিহির কানুনগো, মোহাম্মদ এনামূল হক, আবদুল ওয়াদুদ, তুষিত বড়ুয়া, দেশপ্রিয় বড়ুয়া, স্বপন কামিত্ম বড়ুয়া, রঞ্জিত কুমার চৌধুরী, তারাপদ মজুমদার, আবু মোহাম্মদ প্রমুখ