Saturday, July 13, 2013

Meah Faruki, Prime Minister, Sheikh Hasina's Wedding Witnesses


শেখ হাসিনার বিয়ের সাক্ষী ফারুকীর খবর রাখেনা কেউ!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিয়ের সাক্ষী পটিয়ার প্রবীণ আলীগ নেতা মিয়া আবু মোহাম্মদ ফারুকীর খবর রাখেনা কেউতিনি আক্ষেপ করে বলেন সারা জীবন আলীগের জন্য কাজ করেছিএর বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কিছু চাওয়া পাওয়ার ছিল নাবঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে রাজনীতি করেছিএ সময়ে এসে রাজনৈতিক কোন নেতা কর্মী তার কোন খোজ খবর নেননাতিনি ১৯৫২ সালের অবিভক্ত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলা আলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে চট্টগ্রামের মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলে ভর্তি হই১৯৫১ সালে মেট্রিক পাস করিএর পর আর পড়া লেখা করার সুযোগ হয়নিপারিবারিক রাজনীতির সুত্রধরে আলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি১৯৪৯ আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসা
এর আগে ছাত্র অবস্থায় মুসলিম ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলামএরপর পটিয়া থানা আলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরে অবিভক্ত চট্টগ্রাম জেলা আলীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি১৯৬৮ সালে শেখ হাসিনার বিয়ের স্বাক্ষী ছিলেন এ আলীগ নেতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন তখন কারাগারে
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আক্দ অনুষ্ঠান শেষ করে এম এ আজিজ, আব্দুল্লাহ আল হারুন, এম এ হান্নান সবাই কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে যায়কারাগারে গিয়ে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে পায়ে ধরে সালাম করে কাঁদছিলেন
তখন বঙ্গবন্ধু বলেন তুমি কাঁদছো কেন? আমি তোমাকে কিছু দিতে পারিনি বলে? বঙ্গবন্ধু তখন তাদের দেখিয়ে দিয়ে বলেন তোমার চাচারাই তোমার বিয়ের আয়োজন করবেতোমার বিয়ের অনুষ্ঠান চট্টগ্রামেই হবে
এর এক সপ্তাহ পর চট্টগ্রামের রাইফেল ক্লাবে বিবাহ অনুষ্টানের তারিখ পড়েআর তারিখটি হলো ১৯৬৮ সালের ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম আলীগের পক্ষ থেকে তার বিয়েতে উপহার হিসেবে একটি পাঁচ হাজার টাকা দামের মাজদা কার ও দশ ভরি ওজনের স্বর্ণের সেট প্রদান করা হয়
রাজনীতি করতে গিয়ে কয়েকবার কারাবরণও করতে হয়েছে তাকে১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় মিছিল থেকে তিনি গ্রেফতার হনতিনমাস কারাভোগের পর বের হয়ে তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রম করার সময় আরো কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন প্রবীণ এ নেতা
তিনি জানান ১৯৭৩ সালে তিনি বৃহত্তর পটিয়া থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থীর হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে যানতখন পটিয়া থেকে আরেক মনোনয়ন প্রার্থী ছিল অধ্যাপক নুরুল ইসলামবঙ্গবন্ধু তখন তাকে জানান, তুমি যদি প্রার্থী হও তা হলে প্রচারের মত এ গুরু দায়িত্ব পালন কারো দ্বারা সম্ভব হবেনাবঙ্গবন্ধু আরো বলেন ফারুকী তুমি এবার নুরুল ইসলামকে ছেড়ে দাওআমি বেঁচে থাকলে এর পরবর্তী তোমাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবেএর পর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর তার সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়
বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র তাকে নিয়েই এক হাজারের উপর লেখা লিখেছিলীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার সুবাদে তিনি লেখালেখিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েনএ পর্যন্ত বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক, বিভিন্ন ম্যাজিন ও সামায়িকীতে তার নিজের তিন হাজারের অধিক লেখা ছাপা হয়তিনি জানান ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী তাঁকে না পেয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়এ সময় তার ঘরে ৮টি আলমারীতে রক্ষিত কয়েক হাজার বই পুড়িয়ে দেয়বর্তমানেও আলমারীতে তরে তরে সাজানো রয়েছে প্রায় সাত আট হাজার বিভিন্ন ধরণের বইএখনো লেখালেখি আর বইয়ের যত্ন নেওয়ার মধ্যেই সময় কাটছে প্রায় ৮০ বছর বয়সী এ প্রবীণ রাজনীতিকের
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কোন রাজনৈতিক নেতা কর্মী তার খোজখবর নেয়নাশুধু মাত্র আলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়ছার বেঁচে থাকার সময় প্রায়শ তিনি খোজখবর নিতেনরাজনীতি করেছি আদর্শ নিয়েকিছু পাবার জন্য নয়জাতিকে কি দিতে পেরেছি সেটাই বড় স্বাধীনতার পর কোন নেতা কর্মী বা রাজনৈতিক দল থেকে ২টা টাকাও গ্রহণ করিনি নিজের জায়গাজমি বিক্রি করেই ৫ কণ্যা সন্তানের বিয়ে দিয়েছি
৮১ বছরে পা রাখছেন মিয়া মোহাম্মদ ফারুকী আগামী ৮ফেব্রুয়ারী জম্মদিন পালন করার মাধ্যমে ৮১ বছর বয়স পূর্ণ করতে যাচ্ছেন এ প্রবীণ রাজনীতিকইতোমধ্যে বয়সের ভারে ন্যূজ হয়ে পড়েছেন তিনি চলা ফেরাও ঠিকমত করতে পারেনা তিনিবঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর ক্ষোভে দুঃখে রাজনীতি হতে নিজেকে গুটিয়ে নেন এ রাজনীতিক সূত্র: সিটিজি টাইমস